কিছু কথা


আল্লাহ আমাদের দুনিয়াতে পাঠিয়েছেন শুধুমাত্র তার ইবাদত করার জন্য, ইসলামের দাওয়াত মানুষের কাছে পৌছে দেওয়ার জন্য। ইসলামের বিধান অনুযায়ী নিজের,সামাজিক ও পারিবারিক জীবন পরিচালনার জন্য। আপনার ইচ্ছা ও সুবিধাবাদীদের মত ইসলামের কিছু বিধান পালন আর যেটা পালন করতে পারেন না বা চান না সেটার জন্য নিজের যুক্তি স্থাপন করা,কোর’আন হাদীসের ভূল ব্যাখ্যা করার জন্য নয়। দুনিয়াতে বেচে থাকতে হলে অবশ্যই শিক্ষার প্রয়োজন আছে, রিজিকের প্রয়োজন আছে, তবে সেটা হতে হবে ইসলামের বিধান অনুযায়ী, কোন কুফরী পন্থা অনুযায়ী না। সর্ব প্রথম যে শিক্ষার প্রয়োজন সেটা হল ইসলাম শিক্ষা, তার পাশাপাশি অন্য শিক্ষা। কিন্তু বর্তমানের অধিকাংশ অভিভাবকরাই সমাজের প্রচলিত শিক্ষা ব্যবস্থা কে খুবই বেশি গুরুত্বদেন, অনেকে এতটাই গুরুত্বদেন যে ইসলাম শিক্ষায় নিযেদের সন্তানদের শিক্ষিত করতে যে সময় ব্যয় হয়, সেই সময় প্রচলিত শিক্ষা ব্যবস্থার পেছনে ব্যয় করলে তাদের ভাল রেজাল্ট হবে,ভাল চাকুরী করবে,সন্তানরা দুনিয়াতে বেশি সফল হবে সেই চিন্তা করেন। কিন্তু আপনারা কি কখনও ভেবে দেখেছেন এই ডিগ্রী,সামাজিক স্ট্যাটাস সল্প সময়ের দুনিয়ার জীবনের পরে কোন কাজে আসবে???

আমাদের বর্তমান সমাজে অধিকাংশ মুসলিম এতটাই দুনিয়ার জীবন নিয়ে ব্যস্ত হয়ে গেছে যে মৃত্যূর পরের যে একটা জীবন আছে সেটা প্রায় ভুলেই গেছে। এখন মানুষের মধ্যে প্রতিযোগিতা হয় কার কয়টা ডিগ্রী আছে, ফ্যামিলি তে কয়জন পিএইচডি হোল্ডার আছে, কয়টা সাবযেক্ট এ ডিগ্রী আছে,কোন প্রতিষ্ঠান থেকে ডিগ্রী নিয়েছে,কে কত বড় প্রতিষ্ঠানে চাকরী করছে, এই গুলা নিয়ে।আবার ইসলাম এ নিষিদ্ধ বিষয় গুলির জন্য তারা টাকা খরচ করার প্রতিযোগিতায় নামে। ছেলে মেয়েদের ছোট বেলা থেকে নাচ-গান, ছবি আকার জন্য হাজার হাজার টাকা খরচ করতে তাদের গায়ে বাধেনা, তাদের মতে যত টাকা লাগুক মানুষের কাছে গল্প দিতে হবেনা যে তাদের সন্তানদের কত প্রতিভা আছে!!! স্কুল কলেজে পড়ার সময় যাদের সামর্থ আছে তার অনেক টাকা দিয়ে বাসায় শিক্ষক রাখে, যাতে রেজাল্ট ভাল হয় সমাজে মানুষের কাছে মাথা উচু হয়। কিন্তু বাসায় ইসলাম ধর্ম সেখার জন্য একজন শিক্ষক রাখতে তাদের খুব একটা আগ্রহ দেখা যায়না । কিন্তু মৃত্যুর পরের জীবনের জন্য যে শিক্ষা লাগবে সেটা নিয়ে কয় জন বাবা-মা চিন্তিত??? আজ জদি সমাজে কেউ কাউকে গালি দেয় বা একটা বড় কথা বলে, তবে যাকে গালি দেয়া বা বড় কথা বলা হয় সে প্রতিশোধ নেবার জন্য মরিয়া হয়ে ওঠে, অথচ আমরা যে নবীজি (সঃ) এর উম্মত, যার সুপারিশ ছাড়া কেউ জান্নাতে প্রবেশ করতে পারবেনা, তাকে যদি কেউ গালি দেয় বা কটুক্তি করে তবে কারও কোন মাথাবেথা দেখা যায়না। আমাদের সমাজের মানুশ আল্লাহর হকের থেকে নিজেদের হককে বড় করে দেখে। আবার তারা সপ্ন দেখে জান্নাতে যাবার, কিন্তু তার জন্য তারা পরিশ্রম করেনা। হায়রে মানুশ!! আপনারা যারা অনেক বড় বড় কোম্পানী্তে চাকুরী করেন, বা বড় বড় ডিগ্রী ধারী এবং নিজেদের অনেক স্মার্ট ও শিক্ষিত মনে করেন তাদের বলতে চাই আপনাদের যত জ্ঞানই থাকুক না কেন, যদি পবিত্র কোরান ও হাদীস সম্পর্কে সঠিক জ্ঞান না থাকে তবে আপনারা গন্ড-মূর্খ। মৃত্যু যে কোন সময় আসতে পারে, একটু নিজের বিবেকের কাছে প্রশ্ন করে দেখুন, মৃত্যুর পরের জীবনের জন্য নিজেকে কতটা প্রস্তুত করছেন, যেখানে অনন্ত কাল থাকতে হবে!!?? আমি জান্নাতে যাব কিনা জানিনা, তবে চেষ্টাকরছি আখেরাতের জন্য নিজেকে প্রস্তুত করার। আপনারা আরও অনেক বছর বাচবেন এই গ্যরান্টি দিতে পারলেও আমি আমার বাঁচার গ্যরান্টি দিতে পারিনা।মহান আল্লাহ আমাদের দুনিয়াতে পাঠিয়েছেন তার ইবাদত করার জন্য, কিন্তু সেটা অধিকাংশ মানুষই ভুলে গিয়ে পার্থিব সূখের পিছনে দৌড়ে বেড়াচ্ছে!!!

মৃত্যুর পরে আপনাকে কি জিজ্ঞাসা করা হবে আপনি দুনিয়াতে কোন প্রতিষ্ঠানে পড়াশোনা করেছেন, কি ডিগ্রী লাভ করেছেন,কোন প্রতিষ্ঠানে চাকুরী করেছেন ???

হাশরের ময়দানে সকল কে জবাব দিহী করতে হবে মহান আল্লাহর কাছে সে তার দুনিয়ার জীবন কি ভাবে পরিচালিত করেছে,কি ভাবে পরিচালিত করেছে তার পরিবারকে,কি শিক্ষা দিয়েছে তার সন্তানদের… এই সকল প্রশ্নের উত্তরের জন্য নিজেদের প্রস্তুত করেছেন কি??? সেদিন তো আল্লাহর কাছে এই বলে পার পাবেন না, কাজের ব্যস্ততার কারনে নামাজ পড়তে পারেননি, দুনিয়াবী কাজের ব্যস্ততা ও শিক্ষার জন্য নিজে ও নিজের পরিবারের লোকদের ইসলাম শিক্ষায় শিক্ষিত করতে পারেন নি।

নিজের বিবেকের কাছেই প্রশ্নকরে দেখুন…

দুনিয়াতে আল্লাহ আপনাকে কি কাজের জন্য পাঠিয়েছেন? আপনি সেটা কতটুকু মেনে চলছেন?কোন পথে আয় করছেন? কোন সুদী কারবারের সাথে যুক্ত আছেন কিনা? নারী নেত্রীত্ব ও গনতন্ত্র না্মক কূফরী হারাম পন্থার সমর্থন করে নিজের অজান্তেই আল্লাহর সাথে শীরক করছেন কিনা?

এখনও সময় আছে ভূল করে থাকলে আল্লাহর কাছে তওবা করুন সঠিক পথে ফিরে আসুন।

Leave a comment